Your cart
  • IMG
    {{cart_item.name}}
    {{cart_item.variation_attribute_name}}: {{cart_item.variation_attribute_label}}
    {{cart_item.item_unit}}: {{ setCurrency(cart_item.price)}}
    {{ setCurrency(cart_item.price*cart_item.quantity)}}
    Invalid quantity more than stock
Total :
{{setCurrency(cart.sub_total)}}

There is no item in the cart. If you want to buy, Please click here.

স্যোশাল বিজনেস, থ্রি জিরোস এবং থ্রি জিরোস ক্লাব কি?

Created by :
স্যোশাল বিজনেস, থ্রি জিরোস এবং থ্রি জিরোস ক্লাব
article
Business, Career and Finance
1403
2021-10-02 04:39:43

কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করলো, এখন কি ধরনের প্রজেক্টে কাজ করতেছো?  


আমি বললাম, এই মুহূর্তে অনেক প্রজেক্ট নিয়েই কাজ করছি তবে বেশি ব্যস্ত হলাম আমাদের স্যার (অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস) এর থ্রি জিরোস ক্লাবের জন্য অনলাইন একটি এপ্লিকেশন এর কাজ নিয়ে। 


- থ্রি জিরোস ক্লাব, সেটা আবার কি জিনিস? 


তুমি তো জানো, স্যার ক্ষুদ্র ঋন ও গ্রামীন বাংকের প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে নতুন এক ব্যবসার ধারণা দিয়েছেন যা স্যোশাল বিজনেস বা সামাজিক ব্যবসা নামে এখন এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা সহ সারা পৃথিবী জুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সারাবিশ্বে স্যোশাল বিজনেস এখন আর শুধুই ধারণা না, বাস্তবে স্যোশাল বিজনেস এর প্রয়োগ হচ্ছে, নতুন নতুন ধারনা নিয়ে স্যোশাল বিজনেস তৈরি হচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাধারন মানুষ থেকে বড় বড় চিন্তাবিদরা এইটি নিয়ে ভাবছে। বিশ্বের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে স্যোশাল বিজনেস নিয়ে সেন্টার হচ্ছে, আলোচলা হচ্ছে, ইয়াংরা এইটা নিয়ে গবেষণা করছে। এই লেখার দিন পর্যন্ত ৩৭ টি দেশের ৯৪টি ইউনিভার্সিটিতে ৯৪টি ইউনুস স্যোশাল বিজনেস সেন্টার তৈরি হয়েছে। তাছাড়া স্যোশাল বিজনেস নিয়ে ডিপ্লোমা, অর্নাস ও মাস্টার্স কোর্স শুরু হয়েছে।  


এই বছর প্রফেসর ইউনূস তাঁর সামাজিক ব্যবসায়ের ধারণাকে ক্রীড়া জগতে উন্নয়নে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) থেকে “অলিম্পিক লরেল” পুরস্কার সম্মান পান এবং প্যারিসে আগামী ২০২৪ এ যে অলিম্পিক হবে তা এই স্যোশাল বিজনেসের উপর ভিত্তি করে হতে যাচ্ছে।


- তাহলে ত দোস্ত স্যোশাল বিজনেস আগামীতে পৃথিবীতে বড় একটা প্রভাব ফেলবে। 


অবশ্যই, ইতিমধ্যে বিশ্বের তরুনরা এই সামাজিক ব্যবসায়ের ধারণাকে সাদরে গ্রহন করতে শুরু করছে। 


- বন্ধু, আমি স্যোশাল বিজনেস, স্যোশাল বিজনেস অনেক দিন ধরে শুনতেছি কিন্তু এই স্যোশাল বিজনেস বিষয়টা আমার কাছে পরিস্কার না। তুমি কি আমাকে বলতে পারবা এই স্যোশাল বিজনেস জিনিসটা আসলে কি?


স্যোশাল বিজনেস কি, কেন করবে, কিভাবে করবে এই নিয়ে স্যারের বইয়ে বিস্তারিত আছে। তবে আমি তোমাকে একটু বুঝানোর চেষ্টা করতে পারিে। স্যোশাল বিজনেস সম্পর্কে আমি যতদুর জেনেছে সেই অনুযায়ী স্যোশাল বিজনেসকে কয়েকটি পয়ন্টে বলা যায় এভাবে-  


নাম্বার ১ঃ স্যোশাল বিজনেস বা সামাজিক ব্যবসা নুতন কোন ব্যবসা না, তবে এই ব্যবসার লক্ষ্য আলেদা এবং তা হল সমাজের কোণ সম্যসা কে সমাধানের উদ্দেশ্যে ব্যবসা করা।


নাম্বার ২ঃ সামাজিক ব্যবসায় ব্যক্তিগত লাভের চেয়ে সমস্টিগত লাভ ও পরিবেশের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় তবে এটি আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও টেকসই হতে হয়। 


নাম্বার ৩ঃ সামাজিক ব্যবসায় মুনাফা ম্যাক্সিমাইজ করে না এবং মুনাফার ভাগ মালিকে না দিয়ে বরং ব্যবসাকে আরো বর্তিত করে ।


সংক্ষেপে বললে-


সামাজের সমস্যা সমাধান করার উদ্দেশ্যে আর্থিকভাবে টেকসই যেকোণ ব্যবসাই সামাজিক ব্যবসা যেখানে ব্যক্তিগত লাভের চেয়ে সমস্টিগত লাভ ও পরিবেশের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া


এখন তোমার প্রশ্ন থাকতে পারে স্যোশাল বিজনেস কেন? 


হ্যা, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয় যে স্যোশাল বিজনেস কেন দরকার? 


পৃথিবীতে বর্তমানে যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চলছে, স্যার বিভিন্ন যুক্তি ও উদাহরন দিয়ে বুঝায়েছেন যে বর্তমানে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় অনেক ভুল আছে যা আমরা পৃথিবীকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছি এবং দিন দিন এই পৃথিবীকে আমরা আমাদের বসবাসের অনুপযোগী করে তুলছি। 


সেটা কিভাবে?


বর্তমানে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যে সব ভুল আছে তার মাঝে অন্যতম কয়েকটির হলঃ 


১. আমাদের বর্তমানের ব্যবসা ব্যবস্থায় মুল উদ্দেশ্যেই থাকে বেশি বেশি লাভ করা আর এই বেশি লাভ করতে গিয়ে মানুষ ও পরিবেশের উপর তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আর গুরুত্ব না দেওয়ার ফলে পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর কার্বন সহ বিভিন্ন পর্দাথ নির্গমন করতেছে এবং দিন দিন বিশ্বে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা দ্রুতগতিতে বাড়ছে । পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এখন চরম তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড ভারী বৃষ্টিপাত, খরা বা সাইক্লোন হতে দেখা যাচ্ছে ।


২. আমাদের বর্তমানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যারা বড় বড় ব্যবসায়ী বা সম্পদের অধিকারি তারাই আরো সম্পদের অধিকারি হচ্ছে এবং দিনে দিনে সম্পদকে কেন্দ্রীয়করন করে ফেলছে। পৃথিবীর মাত্র আটজন মানুষের হাতে পৃথিবীর নিচের দিকের ৫০ শতাংশ মানুষের মোট সম্পদের চেয়ে বেশি সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়েছে। মাত্র আটজন মানুষের হাতে পৃথিবীর প্রায় ৪০০ কোটি মানুষের সম্পদের সমপরিমাণ সম্পদ! সম্পদের এই কেন্দ্রীকরণ দিন দিন বেড়ে চলেছে আর এর ফলে পৃথিবীতে দারিদ্র্যতা দিন দিন বাড়ছে যা আগামীর বিশ্বের জন্য বড় হুমকি।


৩. পৃথিবীতে বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে মানুষের মৃত্যু হার অপেক্ষা জন্ম হার বেশি হওয়া দিন দিন বিশ্বের জনসংখা বাড়ছে কিন্তু সেই অনুযায়ী বর্তমানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আমরা কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারছি না কারন বর্তমানের অর্থনৈতিক ও সমাজ ব্যবস্থায় আমরা সবাই চাকরির দিকে দৌড়াই। আবার অন্যদিকে টেকনোলজি ও অটোমেশন এর ফলে এখন অনেক কাজই মেসিন দিয়ে হয়ে যাচ্ছে। ফলে দিনে দিনে পৃথিবীতে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। 


এই কয়েকটি বিষয়ের সারমর্ম করলে দাঁড়ায় এই যে 


আমাদের বর্তমানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দিন দিন সম্পদকে কেন্দ্রীয়করনের মাধ্যমে দারিদ্র্যতা বাড়াছে, বেকারত্ব বাড়াছে আর অতিরিক্ত কার্বন নির্গমনে জলবায়ু পরিবর্তনের মাধ্যমে পৃথিবী এক ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। 


বর্তমানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আরও অনেক সমস্য আছে তবে স্যার এই তিনটি সম্যসাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং বলেছে এই তিনটি সম্যসাকে যদি কমিয়ে জিরো করা যায়, তাহলে বর্তমানে পৃথিবী যে ভয়ংকর পরিস্থিতি তা কাটিয়ে আগামীতে এক নতুন পৃথিবী পাবো। 


আর এইটাই হলো ‘আ ওয়ার্ল্ড অব থ্রি জিরোস’ বা তিনটি শূন্যের পৃথিবী। সুতরাং থ্রি জিরোস হলঃ 


১. কার্বন নিঃসরণ জিরো করা 

২. সম্পদ কেন্দ্রীয়করন জিরো করে দারিদ্র্য কমানো এবং 

৩. কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব জিরো করা 


 একেবারে জিরো না হোক এই তিনটি বিষয়কে যতটা জিরোর দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে পৃথিবী ততটাই মানুষের জন্য মঙ্গল হবে। আর সামাজিক ব্যবসাই পারে এই থ্রি জিরোস অর্জন করতে। 


এখন কথা হল এই থ্রি জিরোস নিয়ে একা বা একটি গোষ্ঠী বা একটি দেশ কাজ করলে তা অর্জন করা সম্ভব হবে না। এই কাজে সারাবিশ্বের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে আর এই ক্ষেত্রে ইয়াংরাই পারে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখতে। ইয়াংদেরকে এই থ্রি জিরোস এর সাথে সম্পর্কিত করে থ্রি জিরোস অর্জন করতে থ্রি জিরোস ক্লাব প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে যেখানে ৫ জন ইয়াং মিলে একটা ক্লাব গঠন করবে। 



একটি ক্লাবের একটি ফোকাস এরিয়া থাকবে, ঐ ফোকাস এরিয়া নিয়ে ক্লাবের সদস্যদের মাঝে কি ভাবনা, তারা থ্রি জিরোস নিয়ে কি করতে চায়, কিভাবে উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন সম্যসা সমাধানে নেতৃত্ব দেওয়া যায় এই রকম সমস্ত মতামত ও কার্যকলাপ নিয়ে নিজেদের মাঝে আলোচনা ও শেয়ার করবে। প্রত্যেকটি ক্লাবের নিবন্ধন থেকে শুরু করে সমস্ত কার্যকলাপে সাহায্য-সহযোগিতা করবে 3Z গ্লোবাল সেন্টার। কয়েকটি ক্লাব মিলে একটি সার্কেল তৈরি হবে আবার কয়েকটি সার্কেল মিলে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। ক্লাব, সার্কেল এবং নেটওয়ার্ক এর পরিচালনা ও এদের বিষয়ে যে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবে 3Z গ্লোবাল সেন্টার। 


 - সত্যিই বন্ধু অনেক বড় চিন্তা। তোমার কথায় আমি বুঝলাম যে পৃথিবীতে বর্তমানে যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চলছে তা তিনটি প্রধান সম্যসা - বেকারত্ব, দারিদ্র্য এবং কার্বন নিঃসরণ দিন দিন বাড়াচ্ছে যা আমাদের পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের অনুপযোগী করে তুলছে। তাই এই তিনটিকে জিরো করতে হবে বা জিরোর দিকে নিয়ে যেতে হবে। আর স্যোশাল বিজনেসই পারে এই থ্রি জিরোস অর্জন করতে।  


সেটাই।


বন্ধু, স্যোশাল বিজনেস নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে “Social Business” দিয়ে গুগলে সার্চ দিলে অনেক কন্টেন্ট পাবা আর ইউটিউবে স্যোশাল বিজনেস নিয়ে অনেক ভিডিও আছে। স্যোশাল বিজনেস এখন অনলাইনে মাসে দুইটি করে অয়েব সিরিজ হয় যেখানে সারা বিশ্বে কে কোথায় কিভাবে স্যোশাল বিজনেস নিয়ে কি করছে তার উপর বাস্তব অভিজ্ঞতাসহ বিস্তারিত আলোচনা হয় সেই ভিডিও গুলোও ইউটিউবে পাবে। স্যোশাল বিজনেস নিয়ে নিয়ে বড় একটা অনলাইন রিসোর্স প্লাটফরম আছে সেটা হল - https://socialbusinesspedia.com 


আর সরাসরি জানতে চাইলে বা স্যোশাল বিজনেস নিয়ে কিছু করতে চাইলে ইউনুস সেন্টার এর সাথে সরাসরি যোগাযোগও করতে পারো। 


- ধন্যবাদ বন্ধু, স্যোশাল বিজনেস নিয়ে অনেক কিছু জানলাম আজ।