Delete
Setting
Add New Item
Menu List
Title | Content Type | Order | Action | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
{{kb_content.name}} {{kb_content.name}} | {{setValue(content_types, kb_content.content_type)}} | {{kb_content.sort_order}} | Preview Edit Edit Content | ||||||
{{kb_content.name}} | {{setValue(content_types, kb_content.content_type)}} | {{kb_content.sort_order}} | Preview Edit Edit Content | ||||||
No record |
দীনের তৃতীয় স্তরঃ ইহসান
আসসালামুয়ালাইকুম,
সমস্ত প্রশংসা আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার জন্য যিনি আমাদেরকে আজকে তার অন্যতম প্রিয় আ'মাল সিয়ামের সামনে আমাদের হাজির করেছেন। সলাত ও সালাম আমাদের প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ সল্লেল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি যিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদেরকে সেই সিয়ামের হক কিভাবে আদায় করতে হবে তা সরবোত্তম রুপে শিক্ষা দিয়েছেন।
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার অশেষ রহমতে আমরা অবশেষে আরো একটি রমজানের সামনে এসে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আল্লাহ আমাদেরকে এর হক পুর্নরুপে আদায় করার তৌফিক দিন, আমীন।
এবার এই রমজানে আমরা চেস্টা করবো প্রতিদিন একটা বিষয় শিখা। সেই বিষয়টা নতুন হতে পারে আবার আমার আগে জানাও থাকতে পারে। কিন্তু আমরা চাইবো প্রতিদিন কিছু না কিছু শিখতে যার জন্য রমজান একটি গুরুত্বপুর্ন সময়।
সালাফে সালেহীন বলতেন 'যে জানে তুমি তার কাছ থেকে জেনে নাও, আর যে জানে না তুমি তাকে শিখিয়ে দাও, তাহলে তুমি যা জানতে না তা জানবে এবং তুমি যা জেনেছ তা সংরক্ষণ করা সহজ হবে।'
তাই আমি ও আমরা এই পেইজে প্রতিদিন একটা বিষয় নিয়ে ছোট করে জানবো জানাবো আ ৩০ দিনের ৩০ টি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে ইসলামকে নিজের জানার চেস্টা করবো , ইনশাআল্লাহ
শাব্দিক বা আভিধানিক অর্থ
ইহসান মানে সুন্দরভাবে কোন কাজ করা।
সংজ্ঞা বা পরিভাষায়ইহসান হলো, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে যে, তুমি যেন তাঁকে দেখছ। আর যদি তা মনে করতে না পার, তাহলে অন্তত: এতোটুকু মনে করবে (অর্থাৎ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করবে) যে, আল্লাহ তোমাকে অবশ্যই দেখছেন।
ইহসানের ভিত্তিসমূহ
ইহসানের একটিই ভিত্তি। তা হল, এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে, যেন তুমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছ। যদি তা সম্ভব না হয় তবে মনে করবে তিনি তােমাকে দেখছেন। (সূরা নাহাল: ১২৮, সূরা আশ শাে'আরা: ২১৭-২২০)
মুহসিনীনদের স্তরসমুহ
মুহসিনীনদের মধ্যে দুটি স্তর রয়েছে, যথা-১। মুশাহাদাহ
“তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে যে, তুমি যেন তাঁকে দেখছ”। এটি ইহসানের সব থেকে উঁচু স্তর। এই স্তরের মুহসিনগণ এমনভাবে তাদের জীবন পরিচালনা করেন, ঠিক যেন তারা আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছেন। মুশাহাদাহ মানে দেখা, প্রত্যক্ষ করা।
২। মুরাকাবাহ
“ইবাদাহর ক্ষেত্রে বিশ্বাস করবে যে, আল্লাহ তোমাকে অবশ্যই দেখছেন”। এই স্তরের মুহসিনগণ খুব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে আমরা যা কিছু করছি আল্লাহ তা'আলা সব কিছু সুক্ষভাবে দেখছেন, গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। মুরাকাবা মানে পর্যবেক্ষণ করা, গার্ড দেয়া বা অবজার্ভ করা।
ইহসানের সমস্ত আয়াতগুলো এখানে দালীল হিসেবে প্রযোজ্য।ইহসানের ক্ষেত্র
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃعن أبي يعلى شداد بن أوس ، عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : إن الله كتب الإحسان على كل شيء ، فإذا قتلتم فأحسنوا القتلة ، وإذا ذبحتم فأحسنوا الذبحة ، وليحد أحدكم شفرته ، وليرح ذبيحته . رواه مسلم .
“আল্লাহ তা'আলা সব ক্ষেত্রে এহসানের নীতি রেখে দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা যখন কোন প্রাণী হত্যা করো তখন সে হত্যাটা সুন্দরভাবে করো, আর যখন জবাই করো তখন জবাইটা সুন্দর করে করো। তোমরা ছুরি ধার দিয়ে নিও যাতে তোমাদের জবেহকৃত প্রাণীটি শান্তি পায়।” (সহীহ্ মুসলমি.) মোট কথা পুরো ইসলামী জীবনটাই ইহসানের চাদরে মোড়াতে হবে। ইবাদাত করার ক্ষেত্রে যেমন ইহসান রয়েছে, অনুরূপ হারাম কাজ থেকে বিরত থাকার ক্ষেত্রেও ইহসান আছে। এমনকি মুরগি জবাই করা থেকে নিয়ে, লেন-দেন, চাল-চলন, আচার-ব্যবহার, মুয়ামালাত ও মুয়াশারাত সর্ব ক্ষেত্রেই ইহসানের মানে উন্নিত হওয়াই একজন মু'মিনের পূর্ণতা।
(বিস্তারিতঃ সূরা নিসা:১২৫, সূরা মায়েদা:৫০, সাজদাহ:৭, হুদ:৭, কাহাফ:৭, মূলক:২, তাওবাহ:১২১, সূরা বাক্বারা:১১২ প্রভৃতি আয়াত।)
ইহসানের মর্মকথা বা দাবী এবং এর গুরুত্ব
ইহসানের মর্মকথা বা দাবী হচ্ছে-
✪ আল্লাহকে পূর্ণ মর্যাদা দেয়া,
✪ আল্লাহকে পরিপূর্ণ সম্মান করা,
✪ আল্লাহকে পূর্ণমাত্রায় ভয় করা এবং ইখলাস ও তাক্বওয়ার ভিত্তিতে শুধু হারাম থেকে নয় বরং মাকরূহ থেকেও পূর্ণ বিরত থাকা
✪ এসব 'আমাল সবসময় সব থেকে সুন্দর ও নিখুঁতভাবে সম্পাদন করা। (সূরা শুয়ারা:২১৭-২২০)
ইহসানের গুরুত্ব
আল্লাহর কাছে ইহসানের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মানের লোকদেরকে কুরআনে ‘মুহসিন’ বা সৎকর্মপরায়ন নামে অভিহিত করা হয়েছে। নিচে ইহসানের গুরুত্বের কিছু নমুনা দেওয়া হলবিপদে-আপদে আল্লাহ তা'আলা এদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা বলেনঃإِنَّ اللَّهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَوْا وَالَّذِينَ هُمْ مُحْسِنُونَ
“আল্লাহ তা'আলা নিশ্চয় পরহেজগার এবং মুহসিনীন বা সৎকর্মশীলদের সাথে আছেন”। (সূরা নাহাল:১২৮)
আল্লাহ তা'আলা মুহসিনীনদেরকে ভাল বাসেন। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَأَحْسِنُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
“আর তোমরা সুন্দরভাবে সৎকর্ম বাস্তবায়ন কর, নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীল দেরকে ভাল বাসেন”। (সূরা বাক্বারা:১৯৫, আল ইমরান:১৪৩)
আল্লাহর পছন্দের শীর্ষে রয়েছে এই ইহসান, “যিনি জীবন ও মৃত্যু তৈরী করেছেন এজন্য যে, তোমাদের মধ্যে কে সব থেকে বেশী সুন্দর 'আমাল করছে তা পরীক্ষা করা”। (সূরা মুলক:২)