Delete
Setting
Add New Item
Menu List
Title | Content Type | Order | Action | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
{{kb_content.name}} {{kb_content.name}} | {{setValue(content_types, kb_content.content_type)}} | {{kb_content.sort_order}} | Preview Edit Edit Content | ||||||
{{kb_content.name}} | {{setValue(content_types, kb_content.content_type)}} | {{kb_content.sort_order}} | Preview Edit Edit Content | ||||||
No record |
ইবাদাত বৈধ হওয়ার শর্ত, ইবাদাতের উৎস ও বুনিয়াদ সমুহ
আসসালামুয়ালাইকুম,
সমস্ত প্রশংসা আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার জন্য যিনি আমাদেরকে আজকে তার অন্যতম প্রিয় আ'মাল সিয়ামের সামনে আমাদের হাজির করেছেন। সলাত ও সালাম আমাদের প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ সল্লেল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি যিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদেরকে সেই সিয়ামের হক কিভাবে আদায় করতে হবে তা সরবোত্তম রুপে শিক্ষা দিয়েছেন।
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার অশেষ রহমতে আমরা অবশেষে আরো একটি রমজানের সামনে এসে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আল্লাহ আমাদেরকে এর হক পুর্নরুপে আদায় করার তৌফিক দিন, আমীন।
এবার এই রমজানে আমরা চেস্টা করবো প্রতিদিন একটা বিষয় শিখা। সেই বিষয়টা নতুন হতে পারে আবার আমার আগে জানাও থাকতে পারে। কিন্তু আমরা চাইবো প্রতিদিন কিছু না কিছু শিখতে যার জন্য রমজান একটি গুরুত্বপুর্ন সময়।
সালাফে সালেহীন বলতেন 'যে জানে তুমি তার কাছ থেকে জেনে নাও, আর যে জানে না তুমি তাকে শিখিয়ে দাও, তাহলে তুমি যা জানতে না তা জানবে এবং তুমি যা জেনেছ তা সংরক্ষণ করা সহজ হবে।'
তাই আমি ও আমরা এই পেইজে প্রতিদিন একটা বিষয় নিয়ে ছোট করে জানবো জানাবো আ ৩০ দিনের ৩০ টি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে ইসলামকে নিজের জানার চেস্টা করবো , ইনশাআল্লাহ
ইবাদাত বৈধ হওয়ার শর্ত যে কোনো ইবাদাত বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হল বিশুদ্ধ দালীল থাকা। কারণ, ইবাদাত হলো তওক্বীফিয়াহ (توقيفية) অর্থাৎ দালীল নির্ভর। এবং এর দালীলদালীল হতে হবে কুরআন ও সাহীহ হাদীছ থেকে।
এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নীতি! এই নীতির মাধ্যমে শির্ক ও বিদ'আতপন্থী সকল ফিরকা, দল ও উপদল থেকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতকে আলাদা করে চেনা যায়।তাই সমাজে যত ইবাদাত প্রচলিত আছে, যেগুলোর পক্ষে কুরআন ও সুন্নাহর দালীল পাওয়া যায় না, তার একটিও ইবাদাত নয়, সবই হল বিদ'আত। এধরণের ইবাদাত পালন করা বৈধ নয়।
যে কোন 'আমাল বা ইবাদাত আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার জন্য দুটি শর্ত রয়েছেঃ
✪ প্রথম শর্তঃ ইখলাস - তথা ইবাদাতটি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য হওয়া এবং
✪ দ্বিতীয় শর্তঃ ইত্তিবায়ে সুন্নাহ - অর্থাৎ তা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাত মােতাবেক হওয়া।
প্রথম শর্তটি হল- কালেমা "لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ" এর প্রকৃত অর্থ। কেননা, এই কলেমার দাবী হলাে এককভাবে ইবাদাতকে আল্লাহর জন্য খালেস করা এবং তাতে অন্য কাউকে শরীক না করা। এই শর্তটি ভংগ হলেই অর্থাৎ আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কিছুকে উদ্দেশ্য করে ইবাদাত করলেই তা শির্কে পরিনত হবে।
আর দ্বিতীয় শর্তটি হল "مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ" একথা সাক্ষ্য দানের প্রকৃত অর্থ। কেননা, এই সাক্ষ্যের দাবী হল- অনিবার্যভাবে রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা, তিনি যা বৈধ ঘােষণা করেছেন তার অনুসরণ করা এবং বিদ'আত বা ইবাদাতের নামে নতুন সৃষ্টি থেকে বিরত থাকা। আর এই শর্ত ভংগ হলেই ইবাদাত বিদ'আতে পরিনত হবে।আল্লাহ্ বলেনঃ
بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
“হ্যাঁ যে ব্যক্তি নিজেকে একমাত্র আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে এবং সে সকর্মশীল, তার জন্য তার প্রতিপালকের নিকট রয়েছে প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং চিন্তাও নেই।”- বাক্বারা- ১১২
“আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করা” অর্থাৎ- সকল ইবাদাতকে একমাত্র আল্লাহর জন্য বিশুদ্ধ করা। এবং “সে সৎকর্মশীল” অর্থাৎ মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্যকারী হওয়া, কেননা এমন কোন সৎকর্ম নেই যা মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে জানিয়ে দেননি।
ইবাদাতের উৎস
সকল ইবাদাত যা সাওয়াবের নিয়তে করা হয় তার উৎস হলো কুরআন এবং সহীহ্ হাদিস। যে সব ইবাদাতের দালীল কুরআন বা হাদিসে পাওয়া যাবে না তা কখনই ইবাদাত নয় যদিও অধিকাং মানুষ তা ইবাদাত মনে করে থ দালীলঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন,وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখিরাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত। (সূরা আল ইমরান/85)
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন:..وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
“...রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। (সুরা হাশর আয়াত ৭)
আল্লাহ অন্যত্র বলেন,
اتَّبِعُوا مَا أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِنْ رَبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا مِنْ دُونِهِ أَوْلِيَاءَ قَلِيلًا مَا تَذَكَّرُونَ
“(হে মানবজাতি!) তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর যা কিছু নাযিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করো এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে অভিভাবক হিসেবে অনুসরণ করো না। কিন্তু তোমরা খুব কমই উপদেশ গ্রহণ করো।” (সুরা আরাফ আয়াত:৩)
ইবাদাত ও বিদ'আতের মধ্যে পার্থক্য
বিদ'আত হলো এমন সকল 'আমাল যা সাওয়াবের আশায় বা ইবাদাত মনেকরে পালন করা হয়, অথচ তার পক্ষে কুরআন-সুন্নাহর কোন দালীল নেই। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনعن أم المؤمنين عائشة رضي الله عنها قالت : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد ) رواه البخاري ومسلم ، وفي رواية لمسلم : ( من عمل عملاً ليس عليه أمرنا فهو رد.
"যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনের মাঝে নতুন কিছু সৃষ্টি করল, যা এর (শরিয়তের) অন্তর্ভুক্ত নয় তা অগ্রহণযোগ্য" (বুখারী-মুসলিম)অর্থাৎ তার 'আমাল গ্রহণীয় তো হবেই না বরং সে এই 'আমাল করার কারনে গুনাহগার হবে। কারন এটি আনুগত্য নয় বরং অবাধ্যতা। এটি ইসলাম নয়; জাহেলিয়াত। বিদ'আত চর্চায় রাসূল (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অপমান ও অবমূল্যায়ন করা হয়। দালীল বিহীণ প্রতিটি ইবাদাতই বিদ'আত। বিদ'আত সর্বদাই পরিত্যইবাদাত ও বিদ'আতের মধ্যে পার্থক্য
ইবাদাত ও বিদ'আতের মধ্যে বাহ্যিক কোন পার্থক্য নেই। উভয়টি দেখে ইবাদাত মনে হবে। পার্থক্য হলো দালীলে। দালীল থাকলে ইবাদাত অন্যথায় বিদ'আত।
আর কোন মানুষ দালীলের গুরুত্ব না বুঝলে তাকে বিদ'আত বুঝানো খুবই মুশকিল। কারণ সে বিদ'আতকেই ইবাদাহ মনে করে বসে থাকে। আর একারণেই বিদ'আত পন্থী প্রতিটি মানুষ দালীল বিমুখ।
সঠিক ইবাদাতের বুনিয়াদ সমুহ
প্রতিটি ইবাদাত মূলত তিনটি বুনিয়াদের উপর প্রতিষ্ঠিত, যথা-
❀ ১। ভালোবাসা
❀ ২। ভয়-ভীতি ও
❀ ৩। আশা-আকাংখা
ইবাদাত সম্পন্ন হওয়ার জন্য এই তিনটি বুনিয়াদ একত্রিত হওয়া একান্ত অপরিহার্য। আল্লাহ্ তা'আলা মু'মিনদের ইবাদাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেনঃ
يُّحِبُّهُمۡ وَيُحِبُّوۡنَهٗۤ
“তিনি (আল্লাহ্) তাদেরকে ভালোবাসেন এবং তারাও তাঁকে ভালোবাসে।”- মায়েদা: ৫৪
তাঁর নাবীদের 'আলাইহিমুস সালাম ইবাদাতের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেনঃ
إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًا وَكَانُوا لَنَا خَاشِعِينَ
“তাঁরা সৎকর্মে দ্রুতগতি সম্পন্ন ছিল, এবং আশা ও ভীতিসহকারে আমাকে আহ্বান করত। আর তারা ছিল আমার কাছে অত্যন্ত বিনীত।”- আম্বিয়া: ৯০
অর্থাৎ শরীয়াত সম্মত কোন কাজ ইবাদাত হতে হলে সে কাজে থাকতে হবেঃ#আল্লাহর কাছে প্রতিদান লাভের অফুরন্ত আশা ও
#আল্লাহর প্রতি সত্য ভালোবাসা এবং
#ভীতি বা ভীতিপূর্ণ বিনয়।
তবে বান্দার কাছে সর্বাধিক প্রিয় হতে হবে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা।
ইবাদাতে এই তিনটি বুনিয়াদের ভিন্নতা আছে এমন কিছু দলের পরিচয়ঃআশা ও ভালোবাসা ছাড়া শুধু ভয় নিয়ে ইবাদাত করে হারুরী/খারেজীরা। এই খারেজীরা এমন এক দল, যারা আলী (রাঃ) এর শাসনকালে তাঁর আনুগত্য থেকে মূখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। তারা আলী (রাঃ)-কে কাফির বলে ফাতওয়া দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, তাঁকে হত্যাও করেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। বহু সাহাবীকে হত্যা করেছিল।
আশা ও ভয় ছাড়া শুধু ভালোবাসা নিয়ে ইবাদাত করে ছুফী/পীর তন্ত্রীরা।
ভালোবাসা ও ভয় ছাড়া শুধু আশা নিয়ে ইবাদাত করে মুরজিয়ারা।
✅ সবগুলো একত্রে নিয়ে ইবাদাত করে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের অনুসারীরা এবং এরাই সঠিক নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত।